ইডেন কলেজের ছাত্রীদের ‘অনৈতিক’ কাজে বাধ্য করা সরকার ও ছাত্রলীগের মেলবন্ধনেই সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব। গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানান তিনি। এ সময় তিনি দায়ীদের দ্রুত গ্রেপ্তার, তদন্ত ও শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান। জেএসডি সভাপতি ইডেন কলেজের ছাত্রীদের অভিযোগ নিয়ে ২১ নারী অধিকার কর্মীর বিবৃতিতে সমর্থন জানিয়ে বলেন, ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে ইডেনের নারী শিক্ষার্থীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো তদন্ত, গ্রেপ্তার বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে নারীদের প্রতি ভয়াবহ নিষ্ঠুরতাকে নীরবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে সরকার। ছাত্রলীগ নেতাদের সিট বাণিজ্য, চাঁদাবাজি এবং শিক্ষার্থীদের অনৈতিক কাজে বাধ্য করার সাক্ষ্য দিয়েছে সাধারণ ছাত্রীসহ ছাত্রলীগের নেত্রীরাই। তারাই এ ভয়াবহ অন্যায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। অথচ এই গুরুতর অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ এবং কলেজ অধ্যক্ষকে অপসারণ করা উচিত ছিল। জেএসডি সভাপতি আরও বলেন, অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া রাষ্ট্রের কর্তব্য। ভয়ংকর অন্যায় করার পরও ছাত্রলীগ ও কলেজ প্রশাসন তাদের কর্মকা-কে যুক্তিসঙ্গত করে তোলার অপচেষ্টা করছে। এ ধরনের নৈতিক অধঃপতন কোনো পরিসংখ্যান দ্বারা পরিমাপ করা সম্ভব নয়।
সরকার ছাত্রসমাজকে ‘কুৎসিত’ পথে ধাবিত করছে উল্লেখ করে রব বলেন, সরকার ‘অবৈধ’ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে ছাত্রলীগকে অর্থ ও পেশিশক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে গিয়ে ধ্বংসের গহ্বরে ঠেলে দিয়েছে। নিজেদের পদ-পদবি সুরক্ষিত করতে মেয়েদের অনৈতিক কাজে বাধ্য করার রাজনীতির ভয়ংকর কৌশল ছাত্রলীগ এবং সরকারের মেলবন্ধনেই সম্ভব। ইডেনের ঘটনা ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়- এটা সরকারের অপশাসন ও দুঃশাসনের রাজনৈতিক সংস্কৃতি। তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগকে নৈতিক বা আইনগত সমর্থন জোগানোর জন্য সরকারকে জাতির কাছে জবাবদিহি করতে হবে। এই সংগঠন নৈতিকভাবে সংশোধিত হওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বিবৃতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিস্থিতি উত্তরণে কয়েকটি প্রস্তাবনা দেন আ স ম আবদুর রব। সেগুলো হলো ইডেনের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন এবং শ্বেতপত্র প্রকাশ করা। জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা। ইডেন কলেজের অধ্যক্ষকে অপসারণ করে বিচারের আওতায় আনা। ইডেনের শিক্ষার্থীদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে শিক্ষার স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনীতির নামে বিপজ্জনক খেলা বন্ধ করা।