নানান কারণে আমরা অনেকে প্রায়ই পিঠের ব্যথা অনুভব করি। অনেকেই পিঠে ব্যথা সহ্য করতে না পেরে পেইনকিলার খান। এতে সাময়িকভাবে ব্যথা কমলেও স্থায়ী সমাধান হয় না। পিঠে ব্যথা নিয়ে মোটেই অবহেলা করা ঠিক না, সামান্য সচেতন হলেই এ ব্যথা থেকে নিরাময় লাভ করে যায়। তবে এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রথম এবং প্রধান শর্ত। গবেষণা বলছে, ৯০ শতাংশ পিঠের ব্যথায় অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয় না। চিকিৎসকের পরামর্শে কিছু নিয়ম মেনে চললে তা ঠিক হয়ে যায়।
সাধারণ পিঠে ব্যথা কমানোর কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি-
খাদ্যাভ্যাস : পিঠের ব্যথার সমস্যায় ভুগলে খাদ্যতালিকায় কিছু অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি খাবার যোগ করুন। এ ক্ষেত্রে হলুদ দুধ খুবই উপকারী। হলুদে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি আর্থ্রাইটিক বৈশিষ্ট্য পিঠের ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে। এজন্য এক গ্লাস হালকা গরম দুধে আধা চা-চামচ হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে রাতে ঘুমানোর আগে পান করুন। ঘুমের মধ্যেই অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি শরীরের বিভিন্ন প্রদাহ কমাতে কাজ শুরু করবে।
ক্যাফেইন: সুস্থ থাকতে অতিরিক্ত ক্যাফেইন আসক্তি কাটাতে হবে। আপনি যদি পিঠের ব্যথায় ভুগেন, তাহলে কম কফি পান করুন। কারণ ক্যাফেইন পেশিতে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এ ক্ষেত্রে পিঠের নিচের দিকে ব্যথা হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে এই ব্যথা দীর্ঘস্থায়ীও হয়। আবার অত্যধিক কফি পান ঘুমের সমস্যাও ডেকে আনে।
ফুট ম্যাসাজ: পায়ের সঙ্গে মেরুদ-ের যোগসূত্র আছে। তাই পিঠে ব্যথা সারাতে ফুট ম্যাসাজ করুন। পায়ের তলায় আঙুলের ডগা দিয়ে কিছুক্ষণ মালিশ করলে পিঠের স্নায়ুতে রক্ত প্রবাহ উন্নত হবে ও ব্যথা কমবে।
গোসল: পিঠে ব্যথা করলে যত দ্রুত সম্ভব হালকা গরম পানিতে গোসল করুন। এতে মানসিক ও শারীরিক চাপ কমবে ও আপনি সতেজ বোধ করবেন। সবচেয়ে ভালো হয় ঘুমানোর আগে হালকা গরম পানিতে গোসল করলে। এতে পেশি ও জয়েন্টে রক্ত প্রবাহ বাড়ে।
ঘুম: দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ুন। অনেক সময় ঘুমের অভাব ও মানসিক চাপের কারণেও পিঠে ব্যথা হতে পারে। ঘুমানোর মাধ্যমে শরীরের টিস্যুগুলো পুনরুদ্ধার হয়। এজন্য দৈনিক ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি।
তবে কিছু পিঠের ব্যথার জন্য এক মুহূর্ত দেরি না করে চিকিৎসকের পরমার্শ নিতে হবে।
ব্যথার কারণ ও লক্ষণ সম্পর্কে-
* পিঠে ব্যথার পাশাপাশি হাঁটার সময় যদি আপনার পায়ের আঙুলগুলো ভারী লাগে বা মাটির দিকে আটকে যেতে চাইছে বলে মনে হয়।
* দৈনন্দিন জীবনযাপনে তেমন কোনো পরিবর্তন ছাড়াই যদি পিঠে ব্যথার সঙ্গে আপনার ওজন কমতে থাকে।
* যদি আপনি পিঠে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন এবং এই ব্যথা শরীরেও অন্যান্য অংশেও অনুভূত হয়।
* যদি নির্দিষ্ট এবং স্থির অবস্থানে ঘুমানোর পরও পিঠে ব্যথা অনুভূত হয়।
* দুর্ঘটনাজনিত আঘাত, পড়ে গিয়ে অথবা খেলতে গিয়ে ব্যথা পেলে।
পিঠে ব্যথার কারণে যদি প্র¯্রাবে সমস্যা অনুভব করেন।
* পিঠে ব্যথার সঙ্গে হাত এবং পায়ের শক্তি হ্রাস পেলে।
* অসাড়তা, কাঁপুনি বা দুর্বলতাসহ পিঠে ব্যথা।
* লালচে দাগ এবং ফোলা ভাবসহ পিঠে ব্যথা।
* পিঠে ব্যথার সঙ্গে জ¦র।